কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম


কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম সম্পর্কে আজ আপনাদের বিস্তারিত জানাবো  আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে। বিদ্যুৎ বিল এর সঠিক হিসাব অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ।আপনার মাসিক হিসাবের একটি বড় অংশ হলো কারেন্ট বিল।



এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাকে বিদ্যুৎ বিলের সঠিক হিসাব বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। বিদ্যুৎ বিলের খরচ কমিয়ে আনার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি টিপস সহ বিল সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

সূচিপত্র

কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম

দিন দিন যে হারে কারেন্ট বিল এর রেট বাড়ছে সেই দিক বিবেচনা করে আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে খুব সতর্ক থাকতে হবে।এই  আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কিভাবে আপনারা বিদ্যুৎ বিলের সঠিক হিসাব বের করবেন।সেই সাথে বিদ্যুৎ বিল কিভাবে কমিয়ে আনতে পারবেন এবং কিভাবে সহজেই বিদ্যুৎ বিল নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন সেই সব কৌশল আর টেকনিক আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
বৈদ্যুতিক ইউনিট থেকে কারেন্ট বিল বের করার নিয়মঃ বৈদ্যুতিক ইউনিট থেকে কারেন্ট বিল বের করার কয়েকটি ধাপ আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।
ধরুন আপনি ৫০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন।বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের রেট অনুযায়ী 

  • ইউনিট খরচ =  ইউনিটের দাম
  • প্রথম ৭৫ ইউনিট=৩.৭৫ টাকা
  • ৭৬-২০০ ইউনিট=৫.৭২ টাকা
  • ২০১-৩০০ ইউনিট=৬.00 টাকা
  • ৩০১-৪০০ ইউনিট=৬.৩৪ টাকা
  • ৪০০ থেকে উপর এ =৯.৯৪ টাকা

বাসা বাড়িতে বা যে কোনো জায়গার বিদ্যুৎ বিল আমরা খুব সহজেই নিম্নোক্ত উপায়ে বের করতে পারি।

মোট বিল=এনার্জি বিল +মিটার বিল

এনার্জি বিল=এক মাসে ব্যবহৃত ইউনিটের পরিমাণ

মিটার বিল=ডিমান্ড চার্জ+ সার্ভিস চার্জ

ডিমান্ড চার্জ=১৫ টাকা পার কিলোওয়াট

সার্ভিস চার্জ=১০ টাকা এক ফেজের জন্য আর ৩০ টাকা থ্রি ফেজের জন্য

ভ্যাট=নেট বিলের সাথে ৫% যোগ হবে

আবার নির্দিষ্ট সময়ে বিল পরিশোধ করতে না মোট বিলের সাথে ৫% জরিমানা সহ পরিশোধ করতে হবে।এভাবে সহজেই আপনি আপনার বিদ্যুৎ বিলের হিসাব বের করে নিতে পারবেন।

কারেন্ট বিলের হিসাবের ধারনা

কারেন্ট বিলের হিসাবের ধারনার মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পারবেন কিভাবে বিদ্যুৎ বিল তৈরি করা হয় আর এর ব্যবস্থাপনা করা হয়। নিচে বিদ্যুৎ বিলের বিভিন্ন উপাদান আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।

মিটার রিডিংঃ মিটার রিডিং হলো কারেন্ট বিলের হিসাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।

ইউনিটঃ ব্যবহৃত বিদ্যুতের পরিমান যা কিলোওয়াট ঘন্টা হিসেবে হিসাব করা হয়।

মিটার রিডিং থেকে ব্যবহৃত ইউনিট ব্যবহার করা হয়। বিদ্যুৎ মিটারের মাধ্যমে একটি বাড়ির বিদ্যুৎ বিলের হিসাব করা হয়। তাই মিটার রিডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মিটার রিডিং সঠিকভাবে নির্ণয় করা জরুরি ভুল মিটার রিডিং এর কারণে ভুল বিদ্যুৎ বিল হিসাব করা হবে।

বিল গণনার প্রয়োজনীয়তা

এটি বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক হিসাব না থাকলে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করতে হতে পারে।অতিরিক্ত বিল এড়ানোর জন্য নিয়মিত মিটার রিডিং করা অতীব জরুরি। এছাড়া আপনি চাইলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারেন। সঠিক ভাবে বিল গণনা না হলে অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করতে হবে এতে পরবর্তীতে নানা রকম ভোগান্তির শিকার হতে হবে।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ঃ আমরা চাইলেই একটু হিসেব করে চলতে পারি। বিদ্যুৎ বিল হিসাব করলে বিল সাশ্রয় করা সম্ভব। আমরা অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত ফ্যান, লাইট, এসি এসব বন্ধ রাখতে পারি। এতে বিদ্যুৎ যেমন সাশ্রয়ী হয় পরিবেশও ভালো থাকে। বর্তমানে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ অনেকাংশে সাশ্রয়ী করা সম্ভব। যেমন-সোলার প্যানেল, এলইডি বাল্ব এসব বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সাহায্য করে।

মিটার রিডিং সংগ্রহ

রিডিং সংগ্রহের পদ্ধতি সঠিকভাবে না জানলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার সম্ভাবনা থাকে। বিদ্যুৎ বিল কমানোর জন্য সঠিক মিটার রিডিং অত্যন্ত জরুরি।
মিটার রিডিং দুই পদ্ধতিতে করা যায়। একটি অ্যানালগ মিটার অপরটি ডিজিটাল মিটার। নিচে এই দুই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
অ্যানালগ মিটারঃ এনালগ মিটার পুরাতন ধরনের মিটার। অ্যানালগ মিটারে একটি ডায়াল থাকে যা বিদ্যুৎ খরচের হিসাব দেখায়। নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে অ্যানালগ মিটার থেকে হিসাব দেখে নিতে পারেন-

১। প্রথমেই মিটারের ডায়ালগুলো ভালোভাবে খেয়াল করুন।
২। ডায়ালের সংখ্যাগুলো ভালোভাবে পড়ুন।
৩। ডায়ালের একটি সূচক থাকে যা সংখ্যার দিক নির্দেশ করে।
৪। ডান থেকে বাম দিকে ভালোভাবে পড়ুন এবং সংখ্যার মান গুলো নোট করে রাখুন।

ডিজিটাল মিটারঃ ডিজিটাল মিটার একটি আধুনিক মিটার। এতে খুব সহজেই হিসাব নির্ণয় করা যায়। ডিজিটাল মিটারের ডিসপ্লে থেকে সরাসরি ইউনিটের পরিমাণ দেখা যায়। নিম্নলিখিত উপায়ে ডিজিটাল মিটার থেকে হিসাব সহজে দেখে নিতে পারেন-
১। মিটারের ডিসপ্লে ভালো করে দেখুন।
২। ডিসপ্লেতে নির্দেশিত সংখ্যাগুলো পড়ুন।
৩। এই সংখ্যাগুলো বিদ্যুতের খরচের পরিমাণ নির্দেশ করে।
৪। পরবর্তীতে এসব সংখ্যার হিসাব নোট করে রাখুন।


বিল গণনার কয়েকটি ধাপ

সঠিকভাবে বিল নির্ধারণ করা খুব জরুরি।সঠিকভাবে বিল গণনা করতে পারলে আপনি আপনার খরচ কমাতে পারবেন।নিচে বিদ্যুৎ বিলের কয়েকটি ধাপ নিয়ে আপনাদের মধ্যে আলোচনা করব।

মাসিক ইউনিট খরচঃ বিদ্যুৎ বিল বের করার প্রথম ধাপ হল ইউনিট বের করা। প্রতিটি মিটারে ইউনিট উল্লেখ করা থাকে। আপনার বিদ্যুৎ মিটারে মাসিক ইউনিটের পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে। আপনি চাইলেই প্রতিদিনের ইউনিট যোগ করে মাসিক হিসাব বের করে নিতে পারবেন। একটি মিটারে মোট ইউনিট বের করতে পারলে আপনি খুব সহজেই আপনার কারেন্ট বিল এর হিসাব বের করতে পারব...

ট্যারিফ রেটঃ ট্যারিফ রেট ইউনিট ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য।সরকার বা বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ এটা নির্ধারণ করে। ট্যারিফ রেট অনুযায়ী আপনার ইউনিট খরচের উপর ভিত্তি করে বিল প্রস্তুত করা হয়।
যেমন ধরুন আপনার ইউনিটের রেট যদি ১০ টাকা হয় আর আপনি যদি ১০০ ইউনিট ব্যবহার করেন তাহলে আপনার বিল হবে ১০০০ টাকা।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উপায়

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উপায় নিয়ে একটু চিন্তা ভাবনা করলে বিদ্যুৎ বিল কমানো সম্ভব। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারলে আপনার একদিকে যেমন অর্থের অপচয় কম হবে অন্যদিকে তেমন পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে। সুতরাং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কয়েকটি উপায় নিয়ে আপনাদের মাঝে আলোচনা করা হলো।

অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমানোঃ বিদ্যুৎ খরচ কমানোর প্রথন ধাপ হলো অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ এর ব্যবহার কমানো।প্রয়োজনের  অতিরিক্ত লাইট , ফ্যান এসব ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।দিনের বেলা প্রয়োজনীয় সুর্যের আলো ব্যবহার করুন,এতে আপনার চোখ ও ভালো থাকবে। আপনার প্রয়োজনে বিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি গুলো ব্যবহার সীমিত করুন। এয়ার কন্ডিশনার এর ব্যবহার কমিয়ে দিন।

বান্নার সময় মাইক্রোওয়েভ এর পরিবর্তে গ্যাস ব্যবহার করুন।টিভি দেখার পর,কম্পিউটারে কাজ করার পর সেগুলো বন্ধ রাখুন।প্রয়োজনে টিম আর বা স্মার্ট লগ ব্যবহার করুন।মাসিক ইউনিট মনিটর করুন।ইউনিট মনিটরিং করলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে আপনি কি পরিমান বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন।

প্রযুক্তির নতুন ব্যবহারঃ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বিদ্যুৎ বিল কমানোর ক্ষেত্রে গুরুতবপূর্ন।সেক্ষেত্রে এলইডি লাইট ব্যবহারে বিদ্যুৎ খরচ কম আসে।তাছড়াও এখন বাজারে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিভিন্ন রকম এসি,ফ্রিজ এসব পাওয়া যায় যেসব ব্যবহার করলে এনার্জি সেইভ হয়।এছাড়াও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য স্মার্ট থার্মোফাস্ট ব্যবহার করা যেতে ।

ইউনিট বের করার নিয়ম

আমরা বাসা বাড়িতে যেসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি তা কি পরিমান বিল খাচ্ছে তা জানার জন্য নিচে একটি চার্ট আপনাদের দেওয়া হল।যা থেকে আমরা খুব সহজেই কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবো।
  • লাইট=১০-১৫০ W
  • ফ্যান ফ্যান=৫০-৮০W
  • ডেক্সটপ=৮০-২৫০W
  • ল্যাপটপ=২০-৬০W
  • এসি=১০০০-৩০০০W
  • ফ্রিজ=৮০-২০০W
  • গিজার= ৮০-১৫০W
  • আয়রন=৫০০-১০০০W
  • পাম্প মোটর=১/৭-৩ HP
এখানে W দিয়ে হিসাব করা হয়।
এই চার্ট দেখে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার কিভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে এবং কোনটি ব্যবহারে বিল কেমন আসতে পারে।

উদাহরনসরূপ একটি বাড়ির বিদ্যুতের হিসাব করবো আর সেখানে কি রকম বিল আসতে পারে তার হিসাব করবো।
একটি বাড়িতে ৮০ ওয়াটের ৩ টি ফ্যান,৪০ ওয়াটের ৪ টি লাইট,২২০ ভোল্ট এর একটি টেলিভিশন প্রতিদিন গড়ে ৭ ঘন্টা করে চললে কেমন বিল আসতে পারে তার একটি হিসাব তুলে ধরা হলো-

হিসাবঃ
৮০ ওয়াটের ৩ টি ফ্যান ১ দিনে যে ওয়াট খরচ করবে=৮০*৩=২৪০ ওয়াট
৪০ ওয়াটের ৪ টি লাইট ১ দিনে যে ওয়াট খরচ করবে=৪০*৪=১৬০ ওয়াট
১ টি টেলিভিশন ১ দিনে যে ওয়াট খরচ করবে=২২০০*৪*৪০ =৭০.4 ওয়াট
২ এইচ পির একটি মোটর একদিনে যে ওয়াট খরচ করে=২*২৪৬=১৪৯২ ওয়াট

এখন ওয়াটকে ১০০০ দিয়ে ভাগ করলে কিলোওয়াট পাবো।একদিনে যে কিলোওয়াট খরচ হবে=
১৯৬২.৪/ ১০০০=১.৯৬ কিলোওয়াট।তাহলে ৬ ঘন্টার জন্য চললে =১.৯৬ * ৬=১১.৭৬ কিলোওয়াট পার ঘন্টা।
তাহলে এখন পুড়া মে মাসের ৩১ দিনের ইউনিট খরচ হবে=১১.৭৬ * ৩১=৩৬৪.৫৬ ইউনিট।এখন প্রতি ইউনিট এর মুল্য ৬.৫  টাকা করে হলে ওই মাসের বিদ্যুৎ বিল হবে=৩৬৪.৫৬ * ৬.৫ =২৩৬৯.৬৪  টাকা।এটাই হলো কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম।

বিল তৈরিতে কি কি খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে


বিদ্যুৎ বিল প্রধানত দুইটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে হয়ে থাকে।
১। বিদ্যুৎ খরচ
২। বিদ্যুৎ বিলের সাথে যুক্ত অন্যান্য খরচ
বিদ্যুৎ খরচঃ ব্যবহৃত ইউনিটের পরিমাণ= বর্তমান মিটার রিডিং-পূর্ববর্তী মিটার রিডিং। বিদ্যুতের দর= বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার নির্ধারিত দর। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিলের সাথে যুক্ত সরকারি ফি ও কর। এছাড়াও মিটার ভাড়া, সার্ভিসিং চার্চ, এবং সরকারি ফি বিদ্যুৎ বিল এর সাথে যুক্ত হয়। ব্যবহৃত ইউনিট থেকে মোট বিলের পরিমাণ এর সাথে মিটার ভাড়া ও অন্যান্য সার্ভিসিং চার্জ যুক্ত হয়ে বিল প্রস্তুত করা হয়।



বিভিন্ন রকম অ্যাপস ও ওয়েবসাইট ব্যবহার

বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য এখন আর লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি চাইলেই ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন। বিভিন্ন অ্যাপস ও ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। এক্ষেত্রে সরকারি অ্যাপস ও প্রাইভেট অ্যাপস এর সাহায্য নিতে পারেন।
সরকারি অ্যাপসঃ এখন বিভিন্ন সরকারি অ্যাপসের মাধ্যমে আপনি বিদ্যুৎ বিল এর যাবতীয় তথ্য এবং বিল পরিশোধের মতো সুবিধা নিতে পারেন। সরকারি অ্যাপস গুলো ব্যবহার করা যেমন সুবিধাজনক তেমনি বিশ্বাসযোগ্য। এই অ্যাপসগুলোতে আপনি  রেজিস্ট্রেশন করে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।

 আরও পড়ুনঃ

প্রাইভেট অ্যাপসঃ প্রাইভেট অ্যাপসগুলোর সুযোগ সুবিধা আরও বেশি থাকে। এতে খুব সুন্দর ভাবে ফিচার ইমেজগুলো ব্যবহার করা হয়। কিছু কিছু প্রাইভেট অ্যাপস অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।অ্যাপ ইন্টারফেস গুলো খুব ভালো থাকে এবং এদের সার্ভিসিং অনেক উন্নত হয়। বিভিন্ন সময় নোটিফিকেশন এবং অটোমেটিক বিল পরিশোধের ব্যবস্থা ও করা থাকে।

বিল পরিশোধের পদ্ধতি

আজকাল বিভিন্ন উপায়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা যায়। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের পদ্ধতি সমূহ সহজ এবং সুবিধাজনক হওয়া খুবই দরকার। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য অনলাইন এবং অফলাইন দুটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
অনলাইনঃ অনলাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা খুবই সুবিধাজনক। আপনি ঘরে বসে আপনার প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন এক নিমিষেই। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন  অ্যাপস, ওয়েবসাইট এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন। বিভিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহী ক্যারি সংস্থা তাদের নিজস্ব অ্যাপস এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিয়ে থাকে। যার ফলে এটি খুবই সুবিধাজনক এবং কম ঝামেলার।

বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এর জন্য এদের ওয়েবসাইট থাকে। আপনি চাইলেই খুব সহজে তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন। এছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিং, বিকাশ, নগদ, রকেটের মাধ্যমেও আপনি মোবাইল থেকে ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন। এটি খুবই সুবিধা জনক মাধ্যম।

বিকাশ অ্যাপস থেকে বিল পরিশোধ করা খুব সহজ একটি মাধ্যম।আপ্নি বিকাশ অ্যাাপস এ গিয়ে প্রথমেই যা যা করবেন তা বর্ননা করা হলো-
  • আপনি প্রথমেই *247#  বাটন চাপুন।
  • তারপর বিল পে তে সিলেক্ট করুন
  • তারপর  Electricity বাছাই করুন
  • পে বিদ্যুৎ বিল সিলেক্ট করুন
  • চেক বিল সিলেক্ট করুন
  • বিলের কাগজ থেকে নম্বর দিন
  • কনফার্ম করুন
  • সঠিক ভাবে বিল পরিশোধ হলো কিনা চেক করুন।

অফলাইন পেমেন্টঃ এখনো অনেকেই অনলাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে সক্ষম নন। তারা ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা বিদ্যুৎ অফিসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন।
সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার নিকটস্থ কোন ব্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন।
আপনি চাইলে পোস্ট অফিসের মাধ্যমেও বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন।
আবার আপনি চাইলে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে নিজে গিয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসতে পারেন।
যে পদ্ধতি আপনার জন্য সুবিধাজনক আপনি চাইলে সেটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল অনায়াসে পরিশোধ করতে পারবেন।

মিটারে যে কাজগুলো অবশ্যই করবেন

আপনি অবশ্যই আপনার মিটার পরীক্ষা করে নিবেন মিটার ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া অতীব জরুরী। কারণ মিটারে সমস্যা থাকলে আপনার বিল বেশি আসবে। আপনি যদি মনে করেন আপনি বিদ্যুৎ খুব প্রয়োজনে সীমিত আকারে ব্যবহার করছেন কিন্তু আপনার ইউনিট এবং বিদ্যুৎ বিল অনেক বেশি আসছে তাহলে অবশ্যই মিটার চেক করে নেওয়া জরুরী। সেক্ষেত্রে আপনি বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। অফিসের লোকজন এসে আপনার মিটার চেক করে প্রয়োজনে মিটার পরিবর্তন করে দিবে।

মিটার থেকে বিদ্যুৎ বিল বের করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই পূর্ববর্তী মিটার রিডিং জেনে রাখতে হবে। বর্তমান মিটার রিডিং থেকে পূর্ববর্তী মিটার রিডিং বাদ দিলেই আপনার ব্যবহৃত ইউনিটি বের করতে পারবেন। প্রয়োজনে আপনি মিটার রিডিং নোট করে রাখতে পারেন। আপনি মিটারে একটু খেয়াল করলে দেখতে পারবেন (Kwh) সহ একটি নাম্বার লিখা আছে যা দ্বারা আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কত ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন।

কত দিনের মধ্যে বিল পরিশোধ করতে না পারলে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে

ইচ্ছা অনুযায়ী গ্রাহক পরিসরের সম্পত্তি ও বিভিন্ন সরঞ্জামের ক্ষতিসাধন করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। মিটার নিজে নিজেই খোলামেলা করলে বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়া হয়। এছাড়াও অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এছাড়াও বিদ্যুৎ বিল তৈরির ৯০ দিনের মধ্যে বিল পরিশোধ করা না হলে লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সাথে অতিরিক্ত চার্জ, ভ্যাট যোগ করা হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অশোভন আচরণ, মারামারি, হাতাহাতি বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও শারীরিক নির্যাতন এসব করলে লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

বিল সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সমাধান

অনেক সময় গ্রাহক বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়। এসব সমস্যার সমাধান না করা হলে গ্রাহক ক্ষতির মুখে পড়ে। নিচে কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করা হলো যা বিদ্যুৎ বিলের সাথে সম্পর্কিত।
বিলের অসামঞ্জস্যতাঃ অনেক সময় গ্রাহক নিজে বুঝতে পারে তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল রেকর্ড করা হয়েছে। এ সমস্যাগুলো সাধারণত কয়েকটি কারণে হয়ে থাকে।
১। অনিয়মিত মিটার রিডিং
২। সঠিক সময়ে বিল প্রস্তুত না করা
৩। ভুল ইউনিট রেকর্ড করা
এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে প্রথমেই আপনাকে নিজেই মিটার রিডিং করে নিতে হবে। আর পূর্ববর্তী মিটারের রিডিং এর সাথে পরবর্তী মিটার রিডিং এডজাস্ট করে হিসাব বের করে নিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ

মিটার সমস্যাঃ অনেক সময় মিটার সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে এক্ষেত্রে ভুলভাল একটা তথ্য দিতে পারে। যার কারণে বিলের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। কয়েকটি লক্ষণ দেখা দিলে আপনি কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন-
১। মিটার সঠিকভাবে কাজ না করলে
২। মিটার সংযোগের সমস্যা দেখা দিলে
৩। মিটার রিডিং এ টি
মিটারের এসব সমস্যা সমাধানের জন্য অবশ্যই বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

শেষ কথা

কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম খুবই সহজ। বিদ্যুৎ বিল সাধারণত মাসে একবার তৈরি করা হয় এবং বিতরণ করা হয়। বিদ্যুৎ বিল সাধারণত ইউনিটের হিসাব অনুযায়ী তৈরি করা হয়ে থাকে। প্রতিটি ইউনিটের জন্য একটি নির্দিষ্ট হার উল্লেখ থাকে। প্রতি মাসে মিটার চেক করুন, বিলের কাগজ সংরক্ষণ করুন, গত মাসের ইউনিটের সাথে বর্তমান মাসের ইউনিট বিয়োগ করলেই আপনার এক মাসের বিদ্যুৎ খরচের ইউনিট বের হয়ে আসবে। এর সাথে সাথে আপনি অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে দিন এতে আপনার বিল সাশ্রয়ী হবে। আশা করছি কারেন্ট বিল বের করার নিয়ম সম্পর্কে আপনারা পরিষ্কার ভাবে সব বুঝতে পেরেছেন। আপনাদের আরো কিছু জানার থাকলে অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন এবং পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url